1. admin@bangladeshtimes71.com : admin :
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৮ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
গলাচিপায় সিলেকশনের মাধ্যমে মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি গঠন। পটুয়াখালী (গলাচিপা)/উভ/গলাচিপায় পৌরসভার উদ্যোগে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্টেট উচ্ছেদ অভিযান চালান।  ধান কাটাকে কেন্দ্র করে তহশীলদারকে মারধর। গলাচিপায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত। সরকারি চোরাই ইটে আ”লীগ নেতার বাড়ি !! – হিজলা উপজেলা, বরিশাল ।  গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজানুর রহমানের বাবার মৃত্যুতে দোয়া মাহফিল। মাথা বিচ্ছিন্ন গলাচিপায় লাশ উদ্ধার! পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজানুর রহমান এর পিতা মোঃ রুহুল আমিন সরদার (৭০) অসুস্থ অবস্থায় মৃত্যু বরন করেন। গলাচিপায় টোল ও খাজনা ফ্রি সবজি বাজার উদ্বোধন। গলাচিপায় কারিতাসের বীজ বিতরন

ওসিকে ফুলেল শুভেচ্ছা মাদক কারবারির!

এফ,আর শুভ
  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ৯ মার্চ, ২০২৪
  • ৮৫ বার পঠিত

ওসিকে ফুলেল শুভেচ্ছা মাদক কারবারির!

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজধানীর পল্লবী থানার ওসিকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ডজনখানেক মাদক মামলার আসামি, মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী জাকির হোসেন। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পাশাপাশি পল্লবী এলাকায় সমালোচনার ঝড় বইছে। চার্জশিটভুক্ত এ আসামি দলবল নিয়ে থানায় উপস্থিত হয়ে পরিদর্শক (ওসি) অপূর্ব হাসানের কক্ষে ঢুকে এ ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। পরে আসামি ফেসবুকে এ ছবি পোস্ট করেন। থানার ওসি ও এ চিহ্নিত অপরাধীর মধ্যে এমন মধুর সখ্য দেখে এলাকাজুড়ে বিরাজ করছে চরম উৎকণ্ঠা।

 

জাকির পোস্টের ক্যাপশনে লেখেন, পুলিশ বাহিনীর জনপ্রিয় অফিসার, বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পল্লবী থানার ওসি অপূর্ব হাসান ভাইয়ের জন্মদিনে প্রাণঢালা অভিনন্দন। লেখার শেষে কয়েকটি লাভ ইমোজিও দেন এ মাদক ব্যবসায়ী। জাকির পল্লবী থানা পুলিশের তালিকায় একজন শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী, ত্রাস ও সন্ত্রাস সৃষ্টিকারী। মাদক মামলার পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনেও একাধিক মামলা রয়েছে।

 

 

সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মাদকসহ একাধিকবার গ্রেপ্তার হয়েছেন জাকির। তার বাড়ি বরিশালের বাবুগঞ্জের মাধবপাশা গ্রামে। দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীর মিরপুর এলাকার-১২ (ব্লক-প, উত্তর কালশী) পল্লবীতে বসবাস করছেন তিনি। জাকির ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সহসভাপতি পদেও দায়িত্ব পালন করছেন।

 

 

ডিএমপি সূত্রে জানা যায়, জাকিরের বিরুদ্ধে পল্লবী থানায় তিনটি মাদক মামলা রয়েছে। মামলা নম্বর ১৫/৮৫৪, তারিখ ৬ ডিসেম্বর ২০১৭। ওই বছরের ১০ অক্টোবর তার বিরুদ্ধে আরও দুটি মাদক মামলা হয়। মামলা নম্বর ২৪/৭০৮ ও ২৫/৭০৯।

 

মিরপুর মডেল থানা পুলিশ ২০১৯ সালে তাকে ৫ হাজার ৫০০ পিস ইয়াবাসহ কল্যাণপুর থেকে গ্রেপ্তার করে। এ ঘটনায় ওই থানার এসআই মো. হাফিজুর রহমান মামলা করেন। যার মামলা নম্বর ৫৬/২৮৭, তারিখ ২৫ এপ্রিল ২০১৯। এ মামলায় পরে পুলিশ তাকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেয়।

 

২০২৩ সালের ৭ জানুয়ারি গাজীপুরের টঙ্গী পশ্চিম থানা এলাকার হাজি মাজহার বস্তির প্রবেশ পথের সামনে থেকে ১ হাজার ১০ পিস ইয়াবাসহ পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। এ ঘটনায় গাজীপুর ডিবি পুলিশের এসআই ফজলুল হক থানায় মাদক মামলা করেন। যার মামলা নম্বর ৩। এ ঘটনায় পুলিশ পরে তার বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেয়। ঢাকার বাইরে কক্সবাজারের রামু থানায়ও তার বিরুদ্ধে মাদক মামলা রয়েছে।

 

মাদক মামলা ছাড়াও তার বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনে একাধিক মামলা রয়েছে। ২০১৭ সালের ৬ ডিসেম্বর ১৭টি ককটেলসহ মিরপুর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে এসআই সুলতান আলী তার বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনে মামলা করেন। মিরপুর থানায় মামলা নম্বর ১৫/৮৫৪।

 

এর আগে ১০ অক্টোবর কালশী থেকে ২১টি ককটেলসহ তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ ঘটনায় এসআই কামরুল হাসান উজ্জল বিস্ফোরক আইনে মামলা করেন। পল্লবী থানায় মামলা নম্বর ২৫/৭০৯।

 

২০১৮ সালের ১৪ ডিসেম্বর মিরপুর মডেল থানায় বিস্ফোরক দ্রব্য ব্যবহার ও মারধরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। যার মামল নম্বর ২৯/৮৫৩।

 

পল্লবী এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ জানান, জাকির এ এলাকার একজন শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ও চিহ্নিত সন্ত্রাসী। তার নানা অপকর্মের বিরুদ্ধে ভয়ে কেউ মুখ খোলার সাহস রাখে না। তিনি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকলেও তার সঙ্গে সরকারি দলের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গেও সখ্য রয়েছে। তার নানা অপকর্মের ফলে পুলিশ তাকে প্রায়ই গ্রেপ্তার করে। তবে পুলিশের সঙ্গে সখ্য থাকার কারণে গ্রেপ্তার হলেও আবার ছাড়া পেয়ে যান।

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক এবং সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ তৌহিদুল হক কালবেলাকে বলেন, যারা অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করে, তাদের সঙ্গে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংযোগ থাকলে অপরাধ বাড়বে। জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানানোর মানে তার সঙ্গে ওই অপরাধীর ব্যক্তিগত সম্পর্ক রয়েছে। এ ব্যক্তিগত সম্পর্ক কি আসলে ব্যক্তিগত সম্পর্ক, নাকি অপরাধলব্ধ অর্থের ভাগভাটোয়ারা হয়, সেটাও প্রশ্ন।

 

তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী মাদক নির্মূলে জিরো টলারেন্স নীতির কথা যতই বলুক। যারা অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করবে, তাদের সঙ্গে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংযোগ থাকলে সেটি সম্ভব হবে না। কোন মামলায় কোন ধারায় কী সাজা হবে, জামিন পেতে কতদিন লাগবে, সেটি যদি যোগসাজশে ক্যালকুলেশন করে মামলা দেওয়া হয়, তাহলে অপরাধীরা বের হয়ে ফের আরও বড় অপরাধ করবে।

 

মিরপুর জোনের ডিসি মো. জসিম উদ্দিন মোল্লার কাছে জানতে চাইলে তিনি কালবেলাকে বলেন, বুড়ো মানুষের আবার জন্মদিন কীসের? এমনটি আসলে মোটেও হওয়ার কথা নয়। তবে পরে যেন তিনি আরও সতর্ক থাকেন, এ বিষয়ে আমি এখনই ওসিকে বলে দিচ্ছি।

 

চিহ্নিত অপরাধীর সঙ্গে এমন সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণের বিষয়ে জানতে চাইলে পল্লবী থানার ওসি অপূর্ব হাসান মোবাইলে জানান, ৫ মার্চ তার জন্মদিনে অনেকেই শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। কে কখন থানায় এসেছেন আর গেছেন, তা বলতে পারব না। পরে আমরা এ বিষয়ে আরও সতর্ক থাকব।

 

জাকির হোসেনের নম্বরে ফোন করলে তিনি জানান, ওসি এলাকার ভাই ব্রাদার। এ ছাড়া তার সঙ্গে আর তেমন কোনো সম্পর্ক নেই।

Facebook Comments Box
এই ক্যাটাগরির আরও খবর