এস.এম.শামীম দিঘলিয়া, খুলনা : দিঘলিয়ার উত্তর চন্দনী মহল এলাকায় গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু দীর্ঘ ২৪ দিন পেরিয়ে গেলেও চাঞ্চল্যে সৃষ্টি বেড়েই চলেছে মৃতের পরিবারের দাবি হত্যা পুলিশ বলছে আত্মহত্যা।
দিঘলিয়ার উত্তর চন্দনী মহলের বাসিন্দা আনিস শেখে এর পুত্র মোস্তাকিন ( ২২) নামে এক যুবকের সঙ্গে আড়াই বছর আগে পানিগাতি গ্রামের বাহারুল কাজির একমাত্র কন্যা তামান্না অনিকা ( ১৮) এর মুসলিম শরিয়া মোতাবেক বিবাহ হয়।
বিবাহের পর থেকেই তামান্না অনিকার উপর চাপ সৃষ্টি হয় যৌতুকের এবং মোস্তাকিন তার স্ত্রীর পরিবারের উপরে আরো চাপ সৃষ্টি করে তাকে ইজিবাইক কিনে দেওয়ার জন্য তামান্না অনিকার পরিবার হতদরিদ্র হওয়ায় পারেনি ইজি বাইক কিনে দিতে।
এভাবেই দিনে দিনে বাড়তে থাকে নির্যাতনের মাত্রা এক পর্যায়ে গত ৭ জুলাই তামান্না অনিকা পানিগাতী স্থ তার নানার বাড়িতে বেড়াতে আসে তিন দিন বেড়ানোর পরে তামান্না অনিকার স্বামী মোস্তাকিন (২২) তাকে পুনরায় তার বাড়িতে নিয়ে যায়। ঐদিন অনিকার লাশ নিয়ে আসে বেলা সাড়ে ৪ টার দিকে দিঘলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তামান্নার মরদেহ স্বামী ও শশুর বাড়ির লোকজন, এবিষয়ে তামান্না অনিকার নানাকে তারা কিছুই জানায় না।
তবে পানিগাতী এলাকার এক বাসিন্দা তামান্না অনিকার লাশ রাত ৯ টার দিকে দেখতে পায় এবং তার নানা সোনা মিয়া কে ফোন কলে জানায় তামান্না অনিকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ লাশ হয়ে পড়ে আছে।
এ খবর পেয়ে তামান্না অনিকার নানা সোনা মিয়া দ্রুত ছুটে যান দিঘলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক পর্যায়ে উক্ত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উপস্থিত থাকা দিঘলিয়া থানা পুলিশ তামান্নার নানা সোনা মিয়া কে দিঘলিয়া থানা অফিসার ইনচার্জের কাছে নিয়ে যান। এবং কোন প্রকার অভিযোগ না শুনে সোনামিয়াকে কয়েকটি স্বাক্ষর করিয়ে মৃত তামান্না অনিকার মরদেহ খুলনা মেডিকেলে প্রেরণ করেন।
বিষয়টি নিয়ে তামান্না অনিকার নানা সোনা মিয়া দিঘলিয়া থানা অফিসার ইনচার্জ বাবুল আক্তার নিকট বলেন যে এটা আত্মহত্যা নয় হত্যা করা হয়েছে। সোনা মিয়া আরো দাবি করেন যে আত্মহত্যা করেছে তামান্না এটা আমরা কোনভাবেই বিশ্বাস করিনা, তামান্নার মৃত্যুকে নিয়ে তাদের দাবি তামান্না কে হত্যা করা হয়েছে শ্বাসরুদ্ধ করে। অপরদিকে তামান্নার স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনের দাবি তামান্না গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। এলাকাবাসী তামান্নার এই অকাল মৃত্যুর জন্য দায়ী কে সেটা জানতে চায়, বিষয়টা নিয়ে এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যে সৃষ্টি হয়েছে গত ২৪ দিনে এলাকার সাধারণ মানুষের জিজ্ঞাসা তামান্নার মৃত্যুর আসল রহস্য কি?
দিঘলিয়া থানা অফিসার ইনচার্জ এর সঙ্গে কথা বললে তিনি প্রতিবেদককে জানান দিঘলিয়া থানায় এ ব্যাপারে তামান্নার নানা সোনা মিয়া বাদী হয়ে অপমৃত্যুর মামলা দিয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে পেলে মৃত্যুর আসল রহস্য জানা যাবে তামান্না কে হত্যা করা হলে তখন হত্যা মামলা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে তামান্নার মরদেহ গোসল করার আগে তার শরীরের বিভিন্ন অংশে ক্ষতর চিহ্ন পাওয়া যায় তামান্নার নানা সোনা মিয়া দাবী করেন যে তামান্না কে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করা হয়েছে এবং বিভিন্ন জায়গায় টাকা পয়সা দিয়ে হত্যাকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
এ বিষয়ে তামান্নার পরিবার সকল ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ প্রশাসনের নিকট তামান্নার আসল মৃত্যুর রহস্য কি তা জানতে চেয়ে প্রতিবেদককে বলেন যে আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল তাই আমরা সত্য উন্মোচন এবং প্রকৃত অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।